এখন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া কোনো মামলা হবে না। থানা বা আদালতে মামলা নথি ভোক্ত করতে চাইলে পরিচয়পত্র প্রদর্শনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পরিচয়পত্র ছাড়া কোনো মামলা গ্রহণ না করার জন্যও নির্দেশ দিয়েছেন আদলত। পাশাপাশি গায়েবি মামলার বাদী খুঁজে বের করতে সিআইডিকে তদন্তেরও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
৪৯ ভুয়া মামলা নিয়ে হয়রানির শিকার রাজধানীর শান্তিবাগের বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আইনজীবী এমাদুল হক বসির বলেন, ‘আদালত আমাদের আবেদনের শুনানি নিয়ে যুগান্তকারী আদেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে এখন থেকে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে বাদীর জাতীয় পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
‘ভুয়া মামলার বাদী খুঁজে বের করতে সিআইডিকে তদন্ত করে ৬০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। একই সাথে ভুয়া মামলাকারীদের খুঁজে বের করতে তদন্তের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।’
৪৯ মামলা মাথায় নিয়ে দীর্ঘ দিন জেল খাটার পর পরিত্রাণ পেতে গত ৭ জুন হাইকোর্টে রিট করেন একরামুল আহসান কাঞ্চন।
রিটে স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের আইজিপি, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক (এসবি), অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক (সিআিইড), মহাপরিচালক র্যাব, ঢাকার পুলিশ কমিশনারসহ ৪০ জনকে বিবাদী করা হয়।
ঢাকার শান্তিবাগ এলাকার বাসিন্দা একরামুল আহসান কাঞ্চনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জেলায় নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, চুরি ডাকাতি, মানবপাচারসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৪৯টি মামলা হয়।
এসব মামলায় তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়। কিন্তু একটি মামলারও বাদী খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাদী খুঁজে না পাওয়ায় অনেক মামলাতে খালাসও পেয়েছেন তিনি। তারপরও তার বিরুদ্ধে এভাবে গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানি করায় তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। এসব মামলায় ১ হাজার ৪৬৫ দিন জেলে খেটেছেন বলেও রিটে উল্লেখ করা হয়েছে।
রিটকারী একরামুল আহসান কাঞ্চন বলেন, ‘হত্যা, ধর্ষণ, চুরি- ছিনতাই-চাঁদাবাজি ও মানবপাচারের মতো ভয়ংকর অপরাধের অভিযোগে আমার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এমন কোনো অভিযোগ নেই, আমার ওপর প্রয়োগ করা হয়নি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসব মামলার বাদীদের খুঁজে পাইনি। এসব মামলায় দীর্ঘ দিন জেলও খেটেছি। তাই এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট।'
সূত্র : নিউজ টুমোরো
إرسال تعليق