(ছবিঃ সানিয়া আজমা সানি)
বন্ধুরা কখনো শুনেছেন একজন নারী হয়ে মাত্র ২৩ বছর বয়সে একাধারে সংবাদ পাঠিকা, উপস্থাপিকা, রেডিও জকি, সেচ্ছাসেবী, কর্পোরেট ট্রেইনার এবং একজন সফল ব্যাবসায়ী হতে ? জি এমনই একজন গুনী মানুষের গল্পই আজ আপনাদের মাঝে তুলে ধরতে যাচ্ছি ।
নাম তার সানিয়া আজমা সানি । বয়স এখন মাত্র ২৩ বছর। ছোট থেকেই তিনি সপ্ন দেখতে পছন্দ করতেন, তার ইচ্ছে ছিলো বড় হয়ে মানুষের জন্য এমন কিছু করবেন যেন তিনি তার মৃত্যুর পরেও মানুষের কাছে ভালোবাসার প্রতিক হিসেবে থাকতে পারেন । আর সেই ইচ্ছে থেকেই তিনি ধিরে ধিরে নিজেকে একজন সফল মানুষ হিসেবে গড়তে থাকেন। তিনি বলেন তার এই পথ চলাটা এতোটাও সহজ ছিলো না । একজন নারীকে একই সাথে মিডিয়া এবং ব্যাবসা সামলাতে সমাজ এবং আশে পাশের মানুষের অনেক অনেক নেগেটিভ কথা শুনতে হয়েছে। থামাতে চেয়েছিলো অনেকেই কিন্তু তার অসম্ভব উদ্দমতা তাকে আজকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে । তিনি আরো বলেন, তিনি স্যামবর্ন হওয়াতে তাকে ছোট বেলা থেকেই অনেক কটুক্তি শুনতে হয়েছিলো ।
এমনকি কালো হয়ে সংবাদ পাঠিকা হওয়ার মত যোগ্যতা আছে কিনা এমন প্রশ্নেরও সম্মুক্ষিন হতে হয়েছিলো তাকে বার বার । অনেকেই আবার বলেছিলেন একই সাথে এতো কাজ করে সামলাতে পারবে তো? এমন হাজারো প্রশ্নের সম্মুক্ষিন হতে হতে নিজেকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে এসেছেন । মানুষের কথায় খারাপ লাগতো না তা কিন্তু না। অঝরে চোখের পানি তারও ঝরেছিলো । তবে সেটা কখনো কাউকে দেখতে দেননি তিনি । তিনি যেমন কাজ করেছেন নিজের জন্য তার পরিবারের জন্য ঠিক তেমনই কাজ করেছেন মানুষের জন্য।
স্কুল জীবন থেকেই তিনি সেচ্ছাসেবী কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। এর পর তিনি নিজেই একটা সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা হয়ে ওঠেন তার সংগঠনের নাম "সারভাইভ ফাউন্ডেশন" যা কাজ করে মুলত পথ শিশু এবং বৃদ্ধাশ্রমকে কেন্দ্র করে । তার স্বপ্ন এই সারভাইব ফাউন্ডেশনকে আরো অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাওয়া ।
এছাড়া তিনি কাজ করেন একজন সংবাদ পাঠিকা হিসেবে নাগরীক টেলিভিশন এ এবং কোয়ালিটি টিভিতে । তিনি একটি সনামধন্য কোম্পানির কর্পোরেট ট্রেইনার হিসেবে কাজ করছেন ।
আর এই মুহুর্তে তিনি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অনলাইন রেডিও স্টেশন রেডিও শহরের মালিক পক্ষের একজন হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছেন এবং একই সাথে তিনি রেডিও শহরের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ভালোবাসার ব্যাঞ্জনধ্বনি হোস্ট করছেন যা প্রতি বৃহস্পতিবার রাত ১১-৩০ মিনিটে ফেইসবুক পেইজ এ লাইভ সম্প্রচার করা হয় । এছাড়া তার আলাদা একটি ইউটিউব চ্যানেল ও রয়েছে ।
এতো কিছুর পাশাপাশি তিনি একজন সফল ব্যাবসায়ী হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছেন। তার নিজের ২টি অনলাইন শপ রয়েছে প্রথমটি হলো Gadgetghor.com যা সম্পুর্নভাবে ইলেক্ট্রনিক্স পন্য আমদানী করে মানূষের কাছে সুলভ মুল্যে পৌছে দেন এবং এখানে যারা প্রতিবন্ধি কাস্টমার রয়েছেন সেসব মানুষের জন্য পন্যগুলো ৫০% ছাড় এ বিক্রি করা হয় । আর অন্যটি একটি অনলাইন শপ হলো You And Me । যেখানে ফ্যাশন সচেতন পোষাক এবং জুইয়েলারি সহ সকল প্রকার ক্রেতার কথা মাথায় রেখে অনেক সুলভ মুল্যে বিক্রয় করা হয়।
তার এতো এতো সাফল্যর পিছনের রহস্যটা জানতে চাইলে সেরাসংবাদকে তিনি বলেন, "জীবনে সবকিছু একবার হলেও চেষ্টা করে দেখা উচিত। স্রষ্টা প্রতিটি মানুষকে কিছু না কিছু ক্ষেত্রে অনুপম দক্ষতা দিয়ে পাঠিয়েছেন, তুমি সেটি কখনো জানতেও পারবে না যতদিন না তুমি সেটি চেষ্টা করে দেখছো। আমি বলতে চাই যে আমি আমার কাজে কতটা সফল হয়েছি আমি নিজেও জানি না, তবে আমি চাই আজ হয়তো গুটি কয়েক মানুষ আমাকে চিনে আমার কাজের মাধ্যমে । তবে আমি চেষ্টা করতে চাই আরো আরো বেশী এবং সফলতার সেই চূড়ায় যেতে চাই যেখানে গেলে একদিন পৃথিবীর সকল প্রান্তের মানুষ আমার কাজের মাধ্যমে আমাকে চিনবে জানবে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবে আমাকে নিয়ে। মানুষের ভালোবাসার কেন্দ্রবিন্দু হতে চাই আমি।" তিনি সেরাসংবাদের কাছ থেকে শেষ এই কথাটি বলেই বিদায় নেন - "নিজেকে এমন জায়গায় নিয়ে দাঁড় করায়েন না যেখান থেকে আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে হয়।এমন জায়গায় দাঁড় করান যেখানে দাঁড়িয়ে হাজার বছর বেচে থাকতে ইচ্ছে করে।"
-সেরা সংবাদ ডেস্ক
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন