গাজায় ইসরায়েলের নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের শর্তগুলো | International News | Gaza

গাজায় ইসরায়েলের নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের শর্তগুলো | International News | Gaza


ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বন্দি অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির জন্য সেখানে ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। গত ১৪ এপ্রিল এ যুদ্ধের দুই মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতারের মাধ্যমে গাজা উপত্যকায় নতুন যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবনা দিয়েছে ইসরায়েল, সেখানে উল্লেখ রয়েছে এ বিষয়টি।

ইসরায়েলের নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবনার একটি অনুলিপি বার্তাসংস্থা রয়টার্সের হাতে এসেছে। সেটি পর্যালোচনা করে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, প্রস্তাবনার প্রধান পয়েন্ট ৫টি। এগুলো হলো—

ক) প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতির প্রথম সপ্তাহে গাজায় বন্দি অবশিষ্ট জিম্মিদের মধ্যে থেকে ১০ জনকে মুক্তি দেবে হামাস, তার পরিবর্তে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে ১২০ জনকে মুক্তি দেবে দেশটির সরকার।

খ) ইসরায়েলি বাহিনী আর গাজা উপত্যকার সব জায়গায় বিচরণ করবে না, বরং ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির আগে গাজার যেসব অঞ্চলে ছাউনি করা হয়েছিল করা হয়েছিল, সেসব ছাউনিতে অবস্থান করবে সেনারা। এছাড়া বিরতি চলাকালে উত্তর ও দক্ষিণ গাজার মধ্যে চলাচলের জন্য নেতজারিম করিডোর ব্যবহার করতে পারবেন ফিলিস্তিনিরা।

গ) গাজায় ফের ত্রাণবাহী ট্রাকের প্রবেশ এবং বাসভবন ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজ শুরু হবে।

ঘ) গাজায় যুদ্ধ স্থায়ীভাবে শেষ করার জন্য তিন মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে।

ঙ) হামাসকে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ পরিত্যাগ করতে হবে এবং গাজায় বর্তমানে কত জন জিম্মি জীবত বা মৃত অবস্থায় আছে, তার সঠিক তথ্য প্রমাণসহ উপস্থাপন করতে হবে।

ইসরায়েলের নতুন এই প্রস্তাবনাটি ইতোমধ্যে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের কাছে কাছে পাঠানো হয়েছে। গোষ্ঠীটির মুখপাত্র আবু জুহরি জানিয়েছেন, নতুন প্রস্তাবনা পর্যালোচনা করছে হামাস তবে সেখানে হামাসকে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ ছেড়ে দেওয়ার যে শর্ত দিয়েছে ইসরায়েল, তা বাতিল করেছেন গোষ্ঠীর নেতারা।

এর আগে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব দিয়েছিল হামাস। সেখানে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ইসরায়েল যদি গাজা থেকে সব সেনা সরিয়ে নিতে সম্মত হয়, তাহলে হামাসও গাজায় বন্দি সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করে দেবে।

তবে নিরাপত্তার অজুহাতে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারে রাজি হয়নি ইসরায়েল। ফলে জিম্মিরাও মুক্তি পায়নি।

তবে এবার হামাস শিগগিরই প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে আশা করছেন মধ্যস্থতাকারীরা। মিসরের এক সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, “হামাস এখন খুব ভালো করেই জানে যে সময় কত মূল্যবান এবং আমার বিশ্বাস, তারা শিগগিরই এ প্রস্তাবে সাড়া দেবে।”

২০২৩ সালে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

আকস্মিক এই হামলার পর ওইদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। টানা ১৫ মাস অভিযান চালানোর পর গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। তবে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার ও জিম্মিদের মুক্তি ইস্যুতে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্য হওয়ায় গত ১৮ মার্চ থেকে ফের গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েল।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। এই নিহতদের ৫৬ শতাংশই নারী ও শিশু।


Post a Comment

أحدث أقدم